রাতে ঘুমানোর আগে করণীয়
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আপনি অনেক খোঁজাখুজির পর নিশ্চয়ই রাতে ঘুমানোর আগে করণীয় এবং ঘুমানোর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ কি তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে এসেছেন।
হ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে রাতে ঘুমানোর আগে করণীয় এবং ঘুমানোর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ে আলোচনা করব। এই লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।
ঘুমানোর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ
একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের বেশ কিছু কাজ রয়েছে ঘুমানোর আগে। আমরা যদি এই কাজগুলো
সঠিকভাবে আদায় করতে পারি তাহলে খুব সহজেই আল্লাহ তায়ালার ইবাদত পালন করা হবে। এ
ছাড়া শয়তান এবং খারাপ জিন থেকে সুরক্ষিত থাকবো। ইসলামে যেভাবে ঘুমানো নিষেধ এবং
যেভাবে উত্তম জানা হয়েছে তাহলে চলুন ঘুমানোর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে
জেনে নেওয়া যাক।
ঘুমানোর আগে ওযু করে ঘুমানো
- আল্লাহ তায়ালার নামে দরজা বন্ধ করা
- ঘুমানোর আগে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাওয়া
- ঘুমানোর সময় অবশ্যই ডান কাত হয়ে ঘুমানো
রাতে ঘুমানোর আগে করণীয়
ঘুমানোর আগে ওযু করে ঘুমানো - আপনি যখন ঘুমাতে যাবেন তখন অবশ্যই অজু করে ঘুমাতে
যাবেন। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। কারণ আমাদের
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালোভাবে অজু করে তারপরে ঘুমাতে
যেতেন। এতে করে সারারাত আল্লাহ তায়ালা আপনার হেফাজতে একটি ফেরেশতা নিয়োজিত
করবেন।
আল্লাহ তায়ালার নামে দরজা বন্ধ করা - সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরেই আল্লাহতালার
নামে দরজা বন্ধ করতে হবে। কারণ সন্ধ্যা হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের খারাপ জিন বাইরে
চলাফেরা করে। আপনি যেন এ সকল খারাপ জিন থেকে হেফাজতে থাকেন তার জন্য আপনাকে
ভালোভাবে আল্লাহতালার নামে দরজা বন্ধ করে নিতে হবে। এতে করে খারাপ জিন ঘরে প্রবেশ
করতে পারবে না।
ঘুমানোর আগে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাওয়া - ঘুমানোর আগে খুবই গুরুত্বপূর্ণ
একটি কাজ হল আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। কারণ আজকে রাত আপনার জন্য
এই পৃথিবীতে শেষ রাত হতে পারে। তাই প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আল্লাহতালার
কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘুমানোর দোয়া করে ঘুমাতে
হবে।
ঘুমানোর সময় অবশ্যই ডান কাত ঘুমানো - আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ যখন
ঘুমাতেন তখন ডান কাত হয়ে ঘুমাতেন। তাই আপনি যখন ঘুমাবেন তখন অবশ্যই সব সময় ডান
কাত হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এতে আপনার শারীরিক বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা হবে
এবং একটি সুন্নত পালন করা হবে।
কোন সময়ে ঘুমালে বরকত কমে যায়
ইসলামে, সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের পরে ঘুমানোকে বরকত কমে যাওয়ার কারণ
হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটিকে "নাকুর" বলা হয়। নাকুর শব্দের অর্থ হল "অনুপযুক্ত
সময়ে ঘুমানো"।
সূর্যোদয়ের আগে ঘুমানোকে বরকত কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় কারণ এই
সময়টিতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের রহমত এবং বরকত বর্ষণ করেন। সূর্যোদয়ের
আগে ঘুমালে এই রহমত এবং বরকত থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সূর্যাস্তের পরে ঘুমানোকে বরকত কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় কারণ এই
সময়টিতে শয়তানরা সক্রিয় থাকে। সূর্যাস্তের পরে ঘুমালে শয়তানদের প্ররোচনায় পড়ার
সম্ভাবনা থাকে, যা বরকত কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
এছাড়াও, ইসলামে রাতের বেলা ঘুমানোকে উত্তম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাতের বেলা
ঘুমালে শরীর ও মনকে বিশ্রাম দেওয়া যায় এবং পরদিনের জন্য শক্তি ও মনোবল অর্জন করা
যায়।
তবে, এটি মনে রাখা জরুরি যে, বরকত কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে শুধুমাত্র নাকুরকে
বিবেচনা করা হয় না। অন্যান্য বিষয়ও বরকত কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে। যেমন, পাপ
করা, আল্লাহর আনুগত্য না করা, অন্যায়-অবিচার করা ইত্যাদি।
সুতরাং, রাতে ঘুমানোর আগে করণীয় এবং বরকত কমে যাওয়া থেকে বাঁচতে হলে নাকুরসহ অন্যান্য বিষয় থেকেও দূরে থাকা
উচিত।
ইসলামে যেভাবে ঘুমানো নিষেধ
ইসলামে কিছু নির্দিষ্টভাবে ঘুমানো নিষেধ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
মাগরিবের নামাজের পর ঘুমানো:
মাগরিবের নামাজের পর ঘুমানো মাকরূহ। কারণ এই
সময়টিতে শয়তানরা সক্রিয় থাকে এবং মানুষকে পাপের দিকে প্ররোচিত করতে পারে।
এশার নামাজের আগে ঘুমানো:
এশার নামাজের আগে ঘুমানোও মাকরূহ। কারণ এই সময়টিতে
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের রহমত এবং বরকত বর্ষণ করেন। এশার নামাজের আগে
ঘুমালে এই রহমত এবং বরকত থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নিষিদ্ধ স্থানে ঘুমানো:
যেসব স্থানে ঘুমানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেসব স্থানে
ঘুমানোও নিষিদ্ধ। যেমন, মসজিদে, কবরস্থানে, পায়খানা বা প্রস্রাবখানা ইত্যাদি
স্থানে ঘুমানো নিষিদ্ধ।
অপবিত্র অবস্থায় ঘুমানো:
অপবিত্র অবস্থায় ঘুমানো নিষিদ্ধ। কারণ অপবিত্র
অবস্থায় ঘুমালে শয়তান মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
অপসর্ধে ঘুমানো:
অপসর্ধে ঘুমানো নিষিদ্ধ। কারণ অপসর্ধে ঘুমালে মানুষের শরীর ও
মনকে ক্ষতি হতে পারে।
এছাড়াও, কিছু বিষয়ের সাথে ঘুমানো নিষিদ্ধ। যেমন,
খালি পেটে ঘুমানো: খালি পেটে ঘুমালে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘুমানো: অতিরিক্ত ঘুমালে শরীরের কর্মক্ষমতা কমে যায়।
অতিরিক্ত ঘুমের পর ঘুম থেকে ওঠা কষ্ট হলে: অতিরিক্ত ঘুমের পর ঘুম থেকে ওঠা কষ্ট
হলে ঘুমানো বন্ধ করা উচিত। রাতে ঘুমানোর আগে করণীয় এবং ঘুমানোর দোয়া পড়ে ঘুমাবেন।
সুতরাং, ইসলামে ঘুমানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে শুধুমাত্র মানুষের কল্যাণের জন্য। এসব
বিষয় থেকে বিরত থেকে আমরা নিজেদেরকে সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করতে পারি।
ঘুমানোর দোয়া বাংলা অর্থসহ
সারা দিনের ক্লান্তির পর পরিশ্রান্ত শরীরে মানুষ রাজ্যের ঘুমে হারিয়ে যায়। আর পর্যাপ্ত ও পরিমাণ মতো ঘুম দেহাবয়বে নিয়ে আসে একরাশ প্রশান্তি। ক্লান্তি-অবসাদ দূর হয়ে শরীর-সৌষ্ঠব হয়ে ওঠে সতেজ ও চনমনে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তোমাদের রাতকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী’ (সুরা নাবা, আয়াত : ০৯)
রাতে নিয়মমাফিক ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য আবশ্যক। মহান আল্লাহ তায়ালাও রাতে ঘুমাতে আদেশ দিয়েছেন এবং দিনে আয়-উপার্জনের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘রাতকে করেছি আবরণ, দিনকে করেছি জীবিকা উপার্জনের সময়।’ (সুরা নাবা, আয়াত : ১০-১১)
হাদিস শরিফে ঘুমের আগে পড়ার কয়েকটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে। চাইলে সব দোয়া পড়া যায়। অথবা নিম্নে উল্লেখিত ঘুমানোর ছোট দোয়াটি অন্তত পড়া যায়। দোয়ার বাংলা উচ্চারণ হলো- ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহ্ইয়া।’
অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমার নামে আমি শয়ন করছি এবং তোমারই অনুগ্রহে আমি পুনরায় জাগ্রত হবো। (বুখারি, হাদিস : ৬৩২৪)
আপনার পছন্দ ও প্রয়োজন হতে পারে এমন আরো পোস্টের তালিকা
- Google map location - গুগল ম্যাপ লোকেশন
- Top 10 Biggest Malls in America
- প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করার নিয়ম
- কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না
- কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ও পশু নির্বাচন
- নফল রোজা রেখে সহবাস করা যাবে কি
- তৃতীয় শ্রেণীর গণিত মডেল প্রশ্ন pdf
- সন্নিহিত কোণ কাকে বলে
- কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার রচনা - কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
উপসংহার
প্রিয় পাঠক আজ রাতে ঘুমানোর আগে করণীয় এবং ঘুমানোর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ে আলোচনা করলাম। আগামীতে অন্য কোন টপিক নিয়ে হাজির হবো।
জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url