কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না জানুন
ভূমিকা
সুপ্রিয় পাঠক আজকাল অনেকেই অনলাইনে কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না নিয়ে জানতে চান। আপনিও হয়তো অনেক খোঁজাখুঁজির পর নিশ্চয়ই কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না কি তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে এসেছেন।
হ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় নাতা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। চলুন এই লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে নিচের লেখাটি পড়ে ফেলি।
কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না
আসুন এখন আর দেরি না করে আমরা কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। জমজম আইটির কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লেখা গুলো পুরোপুরি পড়ে নিন।
ইসলামে কোরবানির জন্য কিছু পশু নির্দিষ্ট করা হয়েছে, এবং কিছু পশু কোরবানি দেওয়া যায় না। নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হলো:
যেসব পশু কোরবানি দেওয়া যায় না:
- খরগোশ, হরিণ, মহিষ ইত্যাদি:
- এগুলো কোরবানি দেওয়া জায়েজ নেই, যদিও মহিষ সম্পর্কে কিছু বিদ্বান ভিন্ন মত পোষণ করেন।
শিং ভাঙা বা কান কাটা পশু:
- যদি পশুর শিং মূল থেকে ভাঙা থাকে বা কানের এক-তৃতীয়াংশ বা বেশি অংশ কাটা থাকে, তাহলে তা কোরবানি দেওয়া জায়েজ নয়।
অন্ধ, রোগা বা অতি দুর্বল পশু:
- যে পশু চোখে দেখে না, খুব বেশি রোগা বা দুর্বল, তা কোরবানি দেওয়া বৈধ নয়।
ল্যাংড়া বা পঙ্গু পশু:
- যে পশু ঠিকভাবে হাঁটতে পারে না বা এক পা সম্পূর্ণ অকেজো, তা কোরবানির জন্য উপযুক্ত নয়।
জন্মগতভাবে কান বা লেজ নেই এমন পশু:
- যদি পশুর কান বা লেজ জন্মগতভাবে না থাকে বা বড় অংশ অনুপস্থিত থাকে, তাহলে তা কোরবানি দেওয়া যায় না।
- দুধদানকারী বা গর্ভবতী পশু (যদি গর্ভ স্পষ্ট হয়):
- গর্ভবতী পশু কোরবানি দেওয়া মাকরুহ, বিশেষত যদি গর্ভ স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
- বন্য বা হিংস্র পশু (যেমন: সিংহ, বাঘ, নেকড়ে):
- এগুলো কোরবানির জন্য বৈধ নয়।
- পাগলা বা মারাত্মক রোগে আক্রান্ত পশু:
- যেমন: রেবিস (জলাতঙ্ক) আক্রান্ত পশু।
যেসব পশু কোরবানি দেওয়া যায়:
- উট, গরু, মহিষ (কোনো কোনো মতে), ভেড়া, ছাগল, দুম্বা—এগুলো কোরবানির জন্য বৈধ, তবে শর্ত হলো পশুটি সুস্থ ও নির্দিষ্ট বয়সের হতে হবে।
সতর্কতা:
কোরবানির পশু নির্বাচনের সময় অবশ্যই শরীয়তের শর্তগুলো মেনে চলতে হবে। কোনো ত্রুটিযুক্ত পশু কোরবানি দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
গরুর অন্ডকোষ খাওয়ার উপকারিতা
গরুর অন্ডকোষ (বীর্যগ্রন্থি বা টেস্টিস) খাওয়ার কিছু সম্ভাব্য স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকতে পারে, যদিও বৈজ্ঞানিক গবেষণা এ বিষয়ে সীমিত। এটিকে কিছু সংস্কৃতিতে "শক্তিবর্ধক" বা যৌন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে বিবেচনা করা হয়। কিছু প্রচলিত ধারণা ও সম্ভাব্য উপকারিতাগুলো নিচে দেওয়া হলো:
সম্ভাব্য উপকারিতা:
প্রোটিন ও পুষ্টির উৎস:
- গরুর অন্ডকোষে প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, জিংক, সেলেনিয়াম এবং অন্যান্য মিনারেল থাকে, যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
হরমোনাল ব্যালেন্স:
- কিছু লোক বিশ্বাস করে যে এতে প্রাকৃতিক টেস্টোস্টেরন বা হরমোন-সদৃশ উপাদান থাকতে পারে, যা পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যে সাহায্য করতে পারে (তবে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সীমিত)।
শক্তি বৃদ্ধি:
- প্রচলিত চিকিৎসায় একে ক্লান্তি দূরকারী ও শক্তি প্রদানকারী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ইমিউনিটি বুস্টার:
- জিংক ও সেলেনিয়াম ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে।
পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্য:
- জিংক স্পার্ম কাউন্ট ও গুণগত মান উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
সতর্কতা ও বিবেচনা:
বৈজ্ঞানিক ভিত্তি সীমিত:
- এগুলোর বেশিরভাগই ঐতিহ্যগত বা লোকজ বিশ্বাস, বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়।
উচ্চ কোলেস্টেরল:
- অন্ডকোষে কোলেস্টেরল বেশি থাকতে পারে, তাই অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
সঠিক প্রস্তুতি:
- অবশ্যই সঠিকভাবে পরিষ্কার ও রান্না করতে হবে, অন্যথায় সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
কীভাবে খাওয়া হয়?
- সাধারণত সেদ্ধ, গ্রিল বা কারি করে রান্না করা হয়।
- চীন, জাপান ও কিছু ল্যাটিন দেশে এটি বিশেষ ডিশ হিসেবে পরিচিত।
- গরুর অন্ডকোষ পুষ্টিকর হতে পারে, তবে এর বিশেষ উপকারিতার দাবিগুলো এখনও গবেষণার অপেক্ষায়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকায় এটি পরিমিত পরিমাণে রাখা যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।
ঈদের রাতে সহবাস করা যাবে কি
হ্যাঁ, ঈদের রাতে সহবাস করা সম্পূর্ণ জায়েজ। ঈদ হলো মুসলিমদের জন্য আনন্দ ও উৎসবের দিন। এই দিনে কোনো বিশেষ ধর্মীয় বিধানে সহবাস করার উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
কেন ঈদের রাতে সহবাস করা জায়েজ?
- ঈদের উদ্দেশ্য: ঈদ হলো আনন্দ ও উৎসবের দিন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখা এই উৎসবের একটি অংশ হতে পারে।
- ধর্মীয় বিধান: ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে স্নেহ, ভালোবাসা এবং ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঈদের দিনেও এই সম্পর্ক বজায় রাখা জায়েজ।
তবে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি:
- ঈদের নামাজ: ঈদের নামাজের আগে সহবাস করা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য শুদ্ধ থাকা জরুরি।
- ইবাদত: ঈদের দিনে ইবাদত-বন্দেগি করা উচিত। তাই সহবাসের কারণে ইবাদতের সময় কমে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
- স্বাস্থ্য: স্বাস্থ্যগত কারণে সহবাস থেকে বিরত থাকার প্রয়োজন হলে তা করতে হবে।
গরুর অন্ডকোষ খাওয়া হালাল না হারাম
আসুন এখন আর দেরি না করে আমরা গরুর অন্ডকোষ খাওয়া হালাল না হারাম বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। জমজম আইটির গরুর অন্ডকোষ খাওয়া হালাল না হারাম নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লেখা গুলো পুরোপুরি পড়ে নিন।
ইসলামি শরীয়তের দৃষ্টিতে গরুর অন্ডকোষ (টেস্টিস) খাওয়া সাধারণত হালাল, তবে কিছু শর্ত ও বিবেচ্য বিষয় রয়েছে। বিস্তারিত নিচে দেওয়া হলো:
হালাল হওয়ার শর্ত:
গরুটি শরীয়তসম্মতভাবে জবাই করা হতে হবে:
- গরুটি আল্লাহর নামে (বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার) জবাই করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে।
- জবাইয়ের নিয়ম (শিরা, গ্রন্থি, খাদ্যনালী কাটা) সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
পশুটি স্বাভাবিকভাবে হালাল প্রাণী হতে হবে:
- গরু ইসলামে হালাল প্রাণী, তাই এর অন্ডকোষ খাওয়াও হালাল (যতক্ষণ না তা নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো বিশেষ কারণ থাকে)।
অপবিত্র বা ক্ষতিকর না হওয়া:
- যদি অন্ডকোষে রক্ত জমে থাকে বা এটি অস্বাস্থ্যকর/নোংরা অবস্থায় থাকে, তবে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
কোনো ক্ষতিকর উপাদান (যেমন: রোগ বা টক্সিন) থাকলে তা খাওয়া হারাম হতে পারে।
কোন ক্ষেত্রে হারাম বা মাকরুহ হতে পারে?
- যদি গরুটি মৃত (মাইতা) বা শরীয়তবহির্ভূত উপায়ে মারা হয়ে থাকে, তাহলে তার অন্ডকোষ খাওয়া হারাম।
- যদি অন্ডকোষটি এমনভাবে প্রস্তুত করা হয় যাতে ইসলামবিরোধী কোনো উপাদান (যেমন: মদ বা হারাম ফ্যাট) মিশ্রিত থাকে, তাহলে তা হারাম।
- কিছু বিদ্বানের মতে, অস্বাভাবিক বা বিকৃত অংশ (যেমন: টিউমারযুক্ত) খাওয়া মাকরুহ হতে পারে।
ফিকহের দৃষ্টিভঙ্গি:
হানাফি, শাফেয়ি, হাম্বলি ও মালিকি মাযহাব: সাধারণত গরুর অন্ডকোষকে হালাল হিসেবে বিবেচনা করে, যেহেতু এটি গরুর একটি অংশ এবং গরু হালাল প্রাণী।
কোনো বিশেষ নিষেধাজ্ঞা নেই: কুরআন বা হাদীসে সরাসরি অন্ডকোষ খাওয়া নিষিদ্ধ বলা হয়নি।
সতর্কতা:
স্বাস্থ্যগত দিক: অতিরিক্ত খাওয়া বা অস্বাস্থ্যকর প্রস্তুতপ্রণালী এড়িয়ে চলুন।
নির্ভরযোগ্য উৎস: গরুটি হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করুন।
সিদ্ধান্ত: গরুর অন্ডকোষ খাওয়া হালাল, তবে অবশ্যই শরীয়তের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। কোনো সন্দেহ থাকলে নির্ভরযোগ্য ইসলামিক স্কলারের পরামর্শ নিন।
হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা
আসুন এখন আর দেরি না করে আমরা হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। জমজম আইটির হালাল ও হারাম খাবারের তালিকা নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লেখা গুলো পুরোপুরি পড়ে নিন।
ইসলামে হালাল (অনুমোদিত) ও হারাম (নিষিদ্ধ) খাবারের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। নিচে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেওয়া হলো:
✅ হালাল খাবারের তালিকা (Halal Foods)
প্রাণিজ প্রোটিন
- গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, উট (শরীয়তসম্মতভাবে জবাইকৃত)
- মুরগি, হাঁস, টার্কি, হালাল পদ্ধতিতে জবাইকৃত
- সামুদ্রিক মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী (যেগুলো আপনা-আপনি মরে না)
- হরিণ, খরগোশ (শিকার করা হলে)
ডেইরি ও ডিম
- গরু, ছাগল বা ভেড়ার হালাল দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য (যেমন: পনির, দই)
হালাল প্রাণীর ডিম
শাকসবজি ও ফলমূল
- সব ধরনের তাজা বা শুকনো ফল ও সবজি (যেমন: আপেল, কলা, গাজর, আলু)
- মাশরুম, বাদাম, বীজ
শস্য ও শর্করা
- গম, ভাত, বার্লি, ওটস, মটরশুটি, লেন্টিল
- হালাল উপাদানে তৈরি রুটি, পাস্তা, কেক
অন্যান্য
- মধু, জলপাই তেল, খেজুর
- জিলাটিন (গরু বা হালাল মাছ থেকে তৈরি)
- ভিনেগার (যাতে অ্যালকোহল না থাকে)
❌ হারাম খাবারের তালিকা (Haram Foods)
নিষিদ্ধ প্রাণী
শূকর (পর্ক) ও এর উৎপাদন (যেমন: বেকন, হ্যাম, জেলাটিন যদি শূকর থেকে তৈরি হয়)
খচ্চর ও গাধার মাংস
- হিংস্র প্রাণী (সিংহ, বাঘ, নেকড়ে, শিয়াল, কুকুর, বিড়াল)
- পাখি যারা নখ দিয়ে শিকার করে (যেমন: ঈগল, বাজ)
অনুপযুক্তভাবে জবাই বা মৃত প্রাণী
- মৃত প্রাণী (মাইতা) – যা নিজে মারা গেছে বা শিকার করা হয়নি
- রক্ত (তাজা রক্ত খাওয়া নিষিদ্ধ, তবে লিভার বা পাকস্থলীতে অবশিষ্ট রক্ত হালাল)
- যে প্রাণী আল্লাহর নাম ছাড়া জবাই করা হয়েছে
নেশাদার ও ক্ষতিকর পদার্থ
- অ্যালকোহল (বিয়ার, ওয়াইন, হুইস্কি, ভদকা ইত্যাদি)
- মাদকদ্রব্য (গাঁজা, আফিম, কোকেন ইত্যাদি)
- ক্ষতিকর রাসায়নিক বা বিষাক্ত পদার্থ
অন্যান্য হারাম উপাদান
- ইউরোপিয়ান চিজ (রেনেট ব্যবহার করা হলে, যদি তা হারাম প্রাণী থেকে নেওয়া হয়)
- কৃত্রিম ফ্লেভার বা রং (যদি হারাম উপাদান থাকে)
- ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট (যদি অ্যালকোহল থাকে)
সন্দেহজনক (Mushbooh) খাবার
- ই-নম্বরযুক্ত ফুড অ্যাডিটিভস (যেমন: E471, যদি এটি শূকর থেকে তৈরি হয়)
- চকলেট বা ক্যান্ডি (যদি অ্যালকোহল বা হারাম জেলাটিন থাকে)
- প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন: সস, স্ন্যাক্স) – উপাদান চেক করতে হবে
📌 বিশেষ নির্দেশনা:
- হালাল সার্টিফাইড পণ্য কেনার চেষ্টা করুন।
- উপাদান তালিকা ভালোভাবে পড়ুন (যেমন: জেলাটিন, ফ্লেভার, এনজাইম)।
- অ্যালকোহল-মুক্ত খাবার বেছে নিন।
কুরবানী সম্পর্কে হাদিস
কুরবানী সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হলো: আসুন এখন আর দেরি না করে আমরা কুরবানী সম্পর্কে হাদিস বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। জমজম আইটির কুরবানী সম্পর্কে হাদিস নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লেখা গুলো পুরোপুরি পড়ে নিন।
১. কুরবানীর ফযীলত সম্পর্কে:
رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: "مَا عَمِلَ آدَمِيٌّ مِنْ عَمَلٍ يَوْمَ النَّحْرِ أَحَبَّ إِلَى اللَّهِ مِنْ إِهْرَاقِ الدَّمِ، إِنَّهَا لَتَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِقُرُونِهَا وَأَشْعَارِهَا وَأَظْلاَفِهَا، وَإِنَّ الدَّمَ لَيَقَعُ مِنَ اللَّهِ بِمَكَانٍ قَبْلَ أَنْ يَقَعَ مِنَ الأَرْضِ، فَطِيبُوا بِهَا نَفْسًا" (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)
- অর্থ: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "কুরবানীর দিন আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে প্রিয় কোনো আমল আদম সন্তান করে না। কিয়ামতের দিন কুরবানীর পশু তার শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত হবে। নিশ্চয়ই রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহর নিকট পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দিত মনে কুরবানী কর।"
২. কুরবানীর গুরুত্ব:
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: "مَا عَمِلَ ابْنُ آدَمَ يَوْمَ النَّحْرِ عَمَلاً أَحَبَّ إِلَى اللَّهِ مِنْ إِهْرَاقِ الدَّمِ، وَإِنَّهُ لَيَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِقُرُونِهَا وَأَشْعَارِهَا وَأَظْلاَفِهَا، وَإِنَّ الدَّمَ لَيَقَعُ مِنَ اللَّهِ بِمَكَانٍ قَبْلَ أَنْ يَقَعَ عَلَى الأَرْضِ، فَطِيبُوا بِهَا نَفْسًا" (ইবনে মাজাহ)
- অর্থ: হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, "কুরবানীর দিনে আদম সন্তানের কোনো আমল আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। কিয়ামতের দিন তা তার শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত হবে। নিশ্চয়ই রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহর নিকট পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা খুশি মনে কুরবানী কর।"
৩. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী না দেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: "مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا"
(ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)
- অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যার সামর্থ্য আছে অথচ সে কুরবানী করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না আসে।"
৪. কুরবানীর পশুর গুণগত মান সম্পর্কে:
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: "كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُضَحِّي بِكَبْشَيْنِ أَمْلَحَيْنِ أَقْرَنَيْنِ، وَيَضَعُ رِجْلَهُ عَلَى صَفْحَتِهِمَا وَيَذْبَحُهُمَا بِيَدِهِ" (বুখারী, মুসলিম)
- অর্থ: হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, "নবীজি (সা.) দুটি সাদা-কালো মিশ্রিত রংয়ের, শিংওয়ালা দুম্বা কুরবানী করতেন। তিনি নিজ হাতে জবাই করার সময় তাদের পাশে পা রাখতেন।"
৫. কুরবানীর সময় সদকার গুরুত্ব:
عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا هَذِهِ الأَضَاحِيُّ؟ قَالَ: "سُنَّةُ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ". قَالُوا: فَمَا لَنَا فِيهَا؟ قَالَ: "بِكُلِّ شَعَرَةٍ حَسَنَةٌ". قَالُوا: فَالصُّوفُ؟ قَالَ: "بِكُلِّ شَعَرَةٍ مِنَ الصُّوفِ حَسَنَةٌ" (ইবনে মাজাহ)
- অর্থ: হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ! এই কুরবানী কী?" তিনি বললেন, "এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আ.)-এর সুন্নাত।" তারা বললেন, "এতে আমাদের জন্য কী সওয়াব আছে?" তিনি বললেন, "পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকী।" তারা বললেন, "যদি পশম হয়?" তিনি বললেন, "পশমের প্রতিটি লোমের বিনিময়েও একটি করে নেকী।"
৬. কুরবানীর মাংস বণ্টন সম্পর্কে:
عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: "مَنْ ضَحَّى مِنْكُمْ فَلاَ يُصْبِحَنَّ بَعْدَ ثَالِثَةٍ وَفِي بَيْتِهِ مِنْهُ شَيْءٌ". فَلَمَّا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، نَفْعَلُ كَمَا فَعَلْنَا عَامَ أَوَّلَ؟ قَالَ: "كُلُوا وَأَطْعِمُوا وَادَّخِرُوا، فَإِنَّ ذَلِكَ الْعَامَ كَانَ بِالنَّاسِ جَهْدٌ فَأَرَدْتُ أَنْ تُعِينُوا فِيهَا" (বুখারী, মুসলিম)
- অর্থ: হযরত সালমান ইবনে আমির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "তোমাদের মধ্যে যে কুরবানী করবে, সে যেন তিন দিন পরও তার ঘরে কিছু সংরক্ষণ না রাখে।" পরের বছর সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরা কি গত বছরের মতই করব?" তিনি বললেন, "খাও, খাওয়াও এবং সংরক্ষণ কর। কারণ গত বছর মানুষ অভাবগ্রস্ত ছিল, তাই আমি চেয়েছিলাম তোমরা তাদের সাহায্য কর।"
৭. কুরবানীর নিয়তের গুরুত্ব:
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: "إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى"
(বুখারী, মুসলিম)
- অর্থ: হযরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "নিশ্চয়ই সকল কাজের ফলাফল নির্ভর করে নিয়তের উপর। প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়ত করবে, তাই পাবে।"
এই হাদীসগুলো থেকে বোঝা যায় যে:
- কুরবানী আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয় ইবাদত
- সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী না দেওয়া অনুচিত
- উত্তম পশু দিয়ে কুরবানী দেওয়া মুস্তাহাব
- কুরবানীর মাংস গরীব-দুঃখীদের মধ্যে বণ্টন করা গুরুত্বপূর্ণ
- খাঁটি নিয়ত সহকারে কুরবানী দেওয়া জরুরী
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই হাদীসগুলোর আলোকে কুরবানী আদায় করার তাওফিক দান করুন।
গরুর কোন অংশ হারাম
আসুন এখন আর দেরি না করে আমরা গরুর কোন অংশ হারাম বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। জমজম আইটির গরুর কোন অংশ হারাম নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লেখা গুলো পুরোপুরি পড়ে নিন।
ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী, গরুর সাধারণত সব অংশই হালাল, তবে কিছু নির্দিষ্ট অংশ বা অবস্থা হারাম বা খাওয়া নিষিদ্ধ হতে পারে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
❌ গরুর যে অংশগুলো হারাম বা খাওয়া নিষিদ্ধ:
- রক্ত (তরল অবস্থায়)
- কুরআনে স্পষ্টভাবে রক্ত হারাম বলা হয়েছে (সূরা আল-বাকারা ২:১৭৩)।
- তবে, মাংসে লেগে থাকা সামান্য রক্ত (যেমন লিভার বা পেশীতে অবশিষ্ট রক্ত) হালাল।
- মূত্রথলি, পিত্তথলি ও জননাঙ্গ
- এগুলো অপবিত্র (নাজিস) বলে বিবেচিত হয় এবং সাধারণত খাওয়া হয় না।
- গ্ল্যান্ডস বা বিষাক্ত গ্রন্থি (যদি থাকে)
- কিছু গ্রন্থি (যেমন: থাইরয়েড, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি) ক্ষতিকর হতে পারে, তাই সেগুলো ফেলে দেওয়া উচিত।
- যে অংশে রোগ বা টিউমার আছে
- অসুস্থ বা অস্বাভাবিক অংশ (যেমন: পুঁজ, টিউমার) খাওয়া হারাম।
- জবাইয়ের আগে মৃত গরুর কোনো অংশ
- গরু যদি জবাই করার আগেই মারা যায় (মাইতা), তাহলে তার সব অংশই হারাম।
বিতর্কিত বা মাকরুহ অংশ:
- অন্ডকোষ (টেস্টিস)
- বেশিরভাগ আলেমের মতে এটি হালাল, তবে কিছু সংস্কৃতিতে এড়িয়ে চলা হয়।
- যদি অস্বাস্থ্যকর বা রোগাক্রান্ত হয়, তবে তা খাওয়া উচিত নয়।
- মগজ (ব্রেন)
- কিছু ফিকহবিদ এটিকে মাকরুহ বলেন, তবে হারাম নয়।
- হাড়ের মজ্জা
- সাধারণত হালাল, তবে অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয়।
✅ গরুর হালাল অংশসমূহ:
- মাংস (গোশত) – যেমন: রিব আই, সিরলয়িন, গিলা, কলিজা (লিভার)।
- অভ্যন্তরীণ অঙ্গ – লিভার, কিডনি, হৃৎপিণ্ড (শর্তসাপেক্ষে পরিষ্কার করতে হবে)।
- চামড়া, হাড় ও শিং (খাদ্য হিসেবে নয়, তবে অন্যান্য ব্যবহার হালাল)।
📌 সতর্কতা:
- গরুটি শরীয়তসম্মতভাবে জবাই করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন।
- রক্ত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
- অস্বাস্থ্যকর বা অস্বাভাবিক অংশ বাদ দিন।
যদি কোনো অংশ নিয়ে সন্দেহ থাকে, তাহলে বিশ্বস্ত ইসলামিক স্কলারের পরামর্শ নিন।
আপনার পছন্দ হতে পারে এমন আরো পোস্টের তালিকা প্রশ্ন উত্তরসহ বিস্তারিত জেনে নিন
- চতুর্ভুজ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি চিত্র সহ
- ইফতার আইটেম - এবারের রোজায় খাদ্যাভ্যাস
- নফল রোজা রেখে সহবাস করা যাবে ক
- ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা
- কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না
- ত্রিভুজ কাকে বলে কত প্রকার ও কী কী
- নফল রোজা রেখে সহবাস করা যাবে কি
- ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নাম ও সময়
- কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না
- ইফতার আইটেম - এবারের রোজায় খাদ্যাভ্যাস
- ঈদের রাতে সহবাস করা যাবে কি
গাধার মাংস খাওয়া হারাম কেন?
কুরবানীর মাংস বন্টনের বিষয়টি জানতে চাই ?
সুদের টাকায় কুরবানি কেন হবে না?
কুরবানী কার জন্য ওয়াজিব?
কয় প্রকারের প্রাণী দ্বারা কুরবানী করা বৈধ, তাদের চিহ্ন কী?
মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী করা যাবে কি?
ধার নেয়া টাকা দিয়ে কুরবানী করা কি?
খরগোশ কি কুরবানি করা যাবে?
বাথরুমে একা পোশাক ছাড়া গোসল করা যাবে কি, ইসলাম এ সম্পর্কে কি বলে?ইসলামে নিজের খালাতো বোনের মেয়েকে কি বিয়ে করা যাবে?
ঘোড়া কুরবানী দেওয়া যায় না কেন?
সাত ভাগ না করে সমান চার ভাগে কুরবানি করা যাবে কি?
কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য কত টাকার মালিক হতে হবে?
একই পশুতে আকিকা ও কুরবানি করা যাবে কি?
একই পশুতে আকিকা ও কুরবানি করা যাবে কি?
কারোর নামে আকিকাহ দেওয়া না হলে তার নামে কুরবানী হবে কি?
ভাড়া বাসায় থাকেন,তবে চার লাখ টাকা নগদ আছে।কুরবানি ওয়াজিব হবে?
কাদের জন্য কোরবানি ফরজ?
ভাড়া বাসায় থাকেন,তবে চার লাখ টাকা নগদ আছে।কুরবানি ওয়াজিব হবে?
কাদের জন্য কোরবানি ফরজ?
সম্পর্কিত প্রশ্ন
কোন পশু সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান?
কোন প্রাণী একনাগাড়ে ছয় মাস ঘুমায়?
পশু প্রানীদের মাঝে ঘোড়া কেন দাঁড়িয়ে ঘুমায়?
স্বচ্ছ কোন প্রাণী আছে কি?
কোন প্রাণীর ঘ্রাণশক্তি বেশী?
পশু তে সব থেকে বুদ্ধিমান কে?
পশু ও প্রানীর মধ্যে পার্থক্য কী?
প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘুমায় কোনটি?
কোন প্রাণীর সবচেয়ে বেশি বাচ্চা হয়?
ঘোড়া কেন দাঁড়িয়ে ঘুমায় ?
পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী কোনটি?
কোন প্রাণী চোখ খুলে ঘুমায়?
কোন প্রাণী তাকিয়ে ঘুমায়?
কোন প্রাণী বমি খাওয়া হয়?
উপসংহার
আজ কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না নিয়ে আলোচনা করলাম। আগামীতে ভালো কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো। আশা করছি উপরের কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না বিষয়ে আলোচনা আপনার ভালো লেগেছে। যদি এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান । আমাদের ফলো করে সাথেই থাকুন।
জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url