অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আজকাল অনেকেই অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ বিষয় নিয়ে
জানতে চান। আপনিও হয়তো অনেক খোঁজাখুঁজির পর নিশ্চয়ই অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক
বন্ধ হওয়ার কারণ কি তা জানার জন্যই আমাদের এই সাইটটিতে এসেছেন।
হ্যাঁ আজকে আমি সঠিকভাবে অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ নিয়ে
আলোচনা করব। চলুন এই লেখার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে
ফেলি।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ
মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে ডিম্বাশয়ের ত্রুটি বা
সিস্ট, হরমোনের তারতম্যজনিত সমস্যা, অপুষ্টি। অপুষ্টির মানে কেবল ভগ্নস্বাস্থ্য
নয়, শারীরিক স্থূলতা বা অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়াও অপুষ্টির লক্ষণ। অবিবাহিত
মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল মেনোপজ।
মেনোপজ হল একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা একজন মহিলার প্রজনন বছরের শেষে ঘটে।
মেনোপজের সময়, ডিম্বাশয়গুলি আর ডিম্বাণু তৈরি করে না এবং ইস্ট্রোজেন এবং
প্রোজেস্টেরন হরমোন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এই হরমোনগুলি মাসিক চক্র
নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মেনোপজ সাধারণত ৪৫থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে। তবে, কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে,
মেনোপজ ৪০ বছরের আগেও শুরু হতে পারে।
দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ
দুই মাস মাসিক না হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ হল:
১) গর্ভধারণ: গর্ভবতী হলে মাসিক বন্ধ হয়ে যায়।
২) হরমোনের ভারসাম্যহীনতা:
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS):
- এটি একটি হরমোনজনিত সমস্যা যা মাসিকের অনিয়মিততা, ওজন বৃদ্ধি, অ্যাকনে এবং পুরুষালি লোম বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
হাইপোথাইরয়েডিজম:
- থাইরয়েড গ্রন্থি যখন পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন তৈরি করে না তখন মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
হাইপারথাইরয়েডিজম:
- থাইরয়েড গ্রন্থি যখন অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন তৈরি করে তখন মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
৩) স্ট্রেস: অতিরিক্ত স্ট্রেস মাসিকের অনিয়মিততা
৪) ওজন কমানো বা বৃদ্ধি: দ্রুত ওজন কমানো বা বৃদ্ধি মাসিকের অনিয়মিততা
৫) ঔষধ: কিছু ঔষধ, যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এবং
স্টেরয়েড, মাসিকের অনিয়মিততা
৬) বয়স:
- কিশোরীদের: কিশোরীদের মাসিক শুরু হওয়ার পর প্রথম কয়েক বছর মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
- মধ্যবয়সী মহিলাদের: মেনোপজের কাছাকাছি
৭) অন্যান্য কারণ:
- গর্ভপাত
- স্তন্যদান
- পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ (PID)
- এন্ডোমেট্রিওসিস
- ক্যান্সার
আপনার যদি দুই মাস মাসিক না হয় এবং আপনি গর্ভবতী না হন, তাহলে আপনার ডাক্তারের
সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ডাক্তার আপনার মাসিকের অনিয়মিততার কারণ নির্ণয় করতে এবং কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা
যা ডাক্তার করতে পারেন:
- গর্ভ পরীক্ষা
- হরমোনের পরীক্ষা
- থাইরয়েড পরীক্ষা
- আল্ট্রাসাউন্ড
- এমআরআই
- চিকিৎসা নির্ভর করবে কারণের উপর।
কিছু সাধারণ চিকিৎসা হল:
- জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি
- হরমোন থেরাপি
- ওজন নিয়ন্ত্রণ
- স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
- শল্যচিকিৎসা
মনে রাখবেন:
আপনার যদি দুই মাস মাসিক না হয় এবং আপনি গর্ভবতী না হন, তাহলে আপনার ডাক্তারের
সাথে পরামর্শ করা উচিত।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার অন্যান্য কারণ
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা:
কিছু ওষুধ, যেমন অ্যান্টিকনভালসেন্টস এবং স্টেরয়েডস, হরমোনের ভারসাম্যকে
প্রভাবিত করতে পারে এবং মাসিক বন্ধ করতে পারে।
অতিরিক্ত ওজন বা অপুষ্টি:
অতিরিক্ত ওজন বা অপুষ্টি মাসিক চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে।
মানসিক চাপ:
দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ মাসিক চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে।
কিছু মেডিকেল অবস্থা:
কিছু মেডিকেল অবস্থা, যেমন থাইরয়েড সমস্যা বা অ্যাড্রেনাল সমস্যা, মাসিক
চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হলে করনীয় কি
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ নির্ণয় করার জন্য, একজন ডাক্তারের
সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তার আপনার মেডিকেল ইতিহাস এবং লক্ষণগুলির উপর
ভিত্তি করে একটি কারণ নির্ধারণ করতে পারেন।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হলে নিম্নলিখিত ৫টি করনীয়:
১. চিন্তা করবেন না। মাসিক বন্ধ হওয়ার অনেক সাধারণ কারণ রয়েছে এবং সেগুলির
মধ্যে বেশিরভাগই গুরুতর নয়।
২. আপনার মাসিক চক্র সম্পর্কে একটি রেকর্ড রাখুন। এটি আপনাকে বুঝতে সাহায্য
করবে যে আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ কী এবং আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলার
সময় কী তথ্য দিতে হবে।
৩. আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। আপনার ডাক্তার আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ
নির্ণয় করতে এবং প্রয়োজনীয় চিকিত্সা শুরু করতে সাহায্য করতে পারেন।
৪. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান, নিয়মিত ব্যায়াম করুন
এবং পর্যাপ্ত ঘুম পান। এটি আপনার হরমোনের ভারসাম্য উন্নত করতে এবং আপনার
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে।
৫. আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। স্ট্রেস মাসিক বন্ধ করতে পারে, তাই
আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যোগব্যায়াম, ধ্যান বা
কাউন্সেলিং আপনাকে স্ট্রেস কমাতে এবং আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে
সাহায্য করতে পারে।
আপনি যদি অবিবাহিত মেয়ে হন এবং আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে উপরের ৫টি
টিপস অনুসরণ করুন। আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ নির্ণয় এবং প্রয়োজনীয়
চিকিত্সা শুরু করার জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলাও গুরুত্বপূর্ণ।
যদি আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে যায় এবং আপনি ৪০ বছরের কম বয়সী হন, তাহলে আপনার
ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নির্ণয় এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা
পেতে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক অনিয়মিত হওয়ার কারণ
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক অনিয়মিত হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু কারণ
হল:
বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন:
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শরীরে হরমোন পরিবর্তনের কারণে মাসিক চক্র অনিয়মিত হতে
পারে। এই পরিবর্তনগুলি সাধারণত কয়েক বছরের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায়।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা:
এটি অনিয়মিত মাসিকের সবচেয়ে সাধারণ কারণ। এটি পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম
(পিসিওএস), থাইরয়েড সমস্যা বা অ্যাড্রেনাল সমস্যার কারণে হতে পারে।
ওজনের পরিবর্তন:
অতিরিক্ত ওজন বা ওজন কমে যাওয়া মাসিক বন্ধ করতে পারে।
স্ট্রেস:
দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস মাসিক বন্ধ করতে পারে।
অসুস্থতা:
কিছু নির্দিষ্ট অসুস্থতা, যেমন ক্যান্সার বা ইনফেকশন, মাসিক বন্ধ করতে পারে।
ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
কিছু ওষুধ, যেমন জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি বা কিছু ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক, মাসিক
বন্ধ করতে পারে।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক অনিয়মিত হওয়ার বিশেষ কারণ
এন্ডোমেট্রিওসিস: এন্ডোমেট্রিওসিস হল একটি অবস্থা যেখানে জরায়ুর
আস্তরণ জরায়ুর বাইরেও বেড়ে ওঠে। এটি মাসিক চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে, যার
ফলে ব্যথা, রক্তপাত এবং অনিয়মিত মাসিক হয়।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (PCOS): PCOS হল একটি হরমোনজনিত ব্যাধি
যা ডিম্বাশয়ে ছোট, সিস্টিক টিউমারের বিকাশের কারণ হয়। এটি মাসিক চক্রকে
প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে অনিয়মিত মাসিক, অত্যধিক লোম এবং ওজন বৃদ্ধি
হয়।
ইনফেকশন: কিছু যৌন সংক্রমণ, যেমন গোনোরিয়ার, মাসিক চক্রকে প্রভাবিত
করতে পারে। যার ফলে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
যদি একজন অবিবাহিত মেয়েকে মাসিক অনিয়মিততার সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে তাকে
একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার অনিয়মিততার কারণ নির্ণয় করতে
এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে সক্ষম হবেন।
অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক অনিয়মিততা রোধ করার উপায়
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- মানসিক চাপ কমাতে পদক্ষেপ নিন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান।
যদি একজন অবিবাহিত মেয়েকে মাসিক অনিয়মিততার সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে তাকে
উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, অনিয়মিততা স্বাভাবিক এবং
সময়ের সাথে সাথে স্বাভাবিক হয়ে যায়। যাইহোক, যদি অনিয়মিততা দীর্ঘস্থায়ী
হয় বা অন্যান্য লক্ষণগুলির সাথে থাকে, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা
গুরুত্বপূর্ণ।
একজন মহিলার গড় মাসিক চক্র ২৮ দিন দীর্ঘ। তবে ২৪ থেকে ৩৮ দিনের মধ্যে
পরিবর্তিত হতে পারে। যদি একটি মাসিক চক্র ছোট হয়, তাহলে একজন ব্যক্তির একই
ক্যালেন্ডার মাসের মধ্যে দুটি পিরিয়ড হতে পারে।
মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার কারণ
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা পরিবর্তনের
কারণে মাসিক চক্রের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, ওভারিয়ান
সিস্ট, বা থাইরয়েড সমস্যার কারণে হতে পারে।
লাইফস্টাইল কারণ: অতিরিক্ত ওজন, অতিরিক্ত ব্যায়াম, বা মানসিক চাপের
কারণে মাসিক চক্রের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
মেডিকেল অবস্থা: কিছু মেডিকেল অবস্থা যেমন অ্যাড্রেনাল সিস্ট,
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (PCOS), বা টিউমার মাসিক চক্রের ব্যাঘাত ঘটাতে
পারে।
মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার প্রতিকার
যদি আপনার মাসিক চক্রের ব্যাঘাত হয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা
গুরুত্বপূর্ণ। তারা সম্ভাব্য কারণগুলি নির্ধারণ করতে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা
দিতে সাহায্য করতে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে, মাসিক চক্রের ব্যাঘাতের জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন হয়
না। এই ক্ষেত্রে, আপনি নিম্নলিখিত জীবনধারা পরিবর্তনগুলি চেষ্টা করে দেখতে
পারেন:
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: প্রচুর ফল, শাকসবজি, এবং সম্পূর্ণ শস্য
খাওয়ার চেষ্টা করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম: হালকা থেকে মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম নিয়মিত
করুন।
মানসিক চাপ কমানো: যোগব্যায়াম, ধ্যান, বা অন্য কোনও চাপ কমানোর কৌশল
চেষ্টা করুন।
আপনি যদি নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি অনুভব করেন তবে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে
পরামর্শ করুন:
- ভারী বা দীর্ঘস্থায়ী রক্তপাত
- তীব্র ব্যথা
- জ্বর
- পেটে ফোলাভাব
- অতিরিক্ত ওজন
- অনিয়মিত মাসিক চক্র
এই লক্ষণগুলি একটি গুরুতর মেডিকেল অবস্থার লক্ষণ হতে পারে।
ঘন ঘন মাসিক হলে প্রথমেই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। কারণ, ঘন ঘন
মাসিকের পিছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন:
হরমোনজনিত সমস্যা: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS), থাইরয়েড সমস্যা,
এন্ডোমেট্রিওসিস ইত্যাদি হরমোনজনিত সমস্যার কারণে ঘন ঘন মাসিক হতে পারে।
অতিরিক্ত ওজন বা ওজন হ্রাস: অতিরিক্ত ওজন বা ওজন হ্রাসও ঘন ঘন মাসিকের
কারণ হতে পারে।
অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: জরায়ুতে টিউমার, গর্ভপাত, গর্ভপাতের
পরবর্তী রক্তপাত ইত্যাদি অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও ঘন ঘন মাসিক হতে
পারে।
ডাক্তার আপনার শারীরিক পরীক্ষা ও ইতিহাসের ভিত্তিতে ঘন ঘন মাসিকের কারণ
নির্ণয় করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন।
ঘন ঘন মাসিক হলে কি করণীয়
ঘন ঘন মাসিকের কিছু সাধারণ করণীয় হল:
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন বা ওজন হ্রাস ঘন ঘন মাসিকের
কারণ হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো: পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে হরমোনজনিত
সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা ঘন ঘন মাসিকের কারণ হতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখতে
সাহায্য করে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকা: ধূমপান ও অ্যালকোহল পান হরমোন
ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
মানসিক চাপ কমানো: মানসিক চাপ হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করতে পারে। তাই
মানসিক চাপ কমাতে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা উচিত।
যদি আপনি উপরোক্ত করণীয়গুলো মেনে চলার পরেও ঘন ঘন মাসিক বন্ধ না হয়, তাহলে
অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়
দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যেমন: অবিবাহিত
মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ :
গরম সেঁক:
- গরম সেঁক মাসিককে দ্রুত আনার জন্য একটি কার্যকর উপায়। এটি রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং জরায়ুতে সংকোচন ঘটায়, যা মাসিককে শুরু করতে সাহায্য করে। গরম সেঁকের জন্য আপনি একটি তোয়ালে গরম জলে ভিজিয়ে নিয়ে আপনার পেটে ও পিঠে সেঁক দিতে পারেন।
টক ফল খাওয়া:
- টক ফল, যেমন লেবু, তেঁতুল, আমড়া, ইত্যাদি মাসিককে দ্রুত আনার জন্য সাহায্য করতে পারে। এগুলিতে থাকা অ্যাসিড রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং জরায়ুতে সংকোচন ঘটায়।
আদা চা পান করা:
- আদা চা মাসিককে দ্রুত আনার জন্য একটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার। আদা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং জরায়ুতে সংকোচন ঘটায়। আদা চা তৈরি করতে, এক কাপ গরম জলে এক চা চামচ আদা কুচি দিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন। তারপর ছেঁকে নিয়ে চা পান করুন।
রসুন খাওয়া:
- রসুনও মাসিককে দ্রুত আনার জন্য সাহায্য করতে পারে। রসুন রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং জরায়ুতে সংকোচন ঘটায়। রসুন খাওয়ার জন্য, প্রতিদিন এক কোয়াক রসুন চিবিয়ে খান বা রসুন চা পান করুন।
- এই ঘরোয়া উপায়গুলো সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে শুরু করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে, যদি আপনি কোনও শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে এই উপায়গুলো ব্যবহার করার আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য কিছু ওষুধও রয়েছে, যেমন:
মেনোট্রোগেন:
- মেনোট্রোগেন একটি হরমোন ওষুধ যা মাসিককে দ্রুত আনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
মিফেপ্রিস্টোন:
- মিফেপ্রিস্টোন একটি ওষুধ যা মাসিকের প্রক্রিয়া শুরু করে। এই ওষুধগুলো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়। দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত, যেমন:
- অতিরিক্ত ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত ব্যায়াম মাসিককে বিলম্বিত করতে পারে। অতিরিক্ত চাপ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। মানসিক চাপও মাসিককে বিলম্বিত করতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম মাসিককে নিয়মিত করতে সাহায্য করে।
মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম
আসলে মাসিক হলো সম্পূর্ণরূপে একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যাতে মানুষের কোন হাত
নেই । মাসিক না হলে ঔষধ সেবন অথবা কোন কৃত্রিম উপায়ে মাসিক ঘটানো বা বন্ধ করা
কোন স্থায়ী সমাধান হয় না । তবে যদি একেবারেই কোন উপায় না থাকলে, তাহলে আপনি
মাসিক হওয়ার বিশেষ ঔষুধ গ্রহণ করতে পারেন।
মাসিক নিয়মিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির ঔষধ রয়েছে। 5mg মাসিক নিয়মিত করার
ট্যাবলেটগুলো আমাদের শরীরের ন্যাচারাল হরমোনের ওপর কাজ করে থাকে এবং যাদের
মাসিকের সমস্যা আছে তাদের অনিয়মিত মাসিক থেকে মুক্তি করে দেয়।নিচে নিয়মিত মাসিক
হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম দেওয়া হলঃ
ঔষধের নাম →কোম্পানি→প্রতি পিস মূল্য
- Normens →Renata →6 Taka
- Ethinor → Eskayef →5 Taka
- Feminor →Acme → 5 Taka
- Menoral → Square →6.50 Taka
- Mensil N→HealthCare →7.50 Taka
- Remens →Populer →5 Taka
- Menogia → ACI → 6 Taka
- Norcolut →City Overseas →7.25 Taka
- Norestin →Nuvista →6.84 Taka
- Noteron → Incepta →5.5 Taka
মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম হল প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট। প্রোজেস্টেরন হল একটি
হরমোন যা ডিম্বাশয় দ্বারা উৎপন্ন হয়। এটি মাসিক চক্রের দ্বিতীয় অংশে প্রধান
হরমোন।
প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট মাসিক চক্রের স্বাভাবিক প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে
সাহায্য করে। এটি মাসিকের সময় রক্তপাত কমাতে, মাসিকের ব্যথা কমাতে এবং মাসিকের
অনিয়মিততা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।
বাংলাদেশে কিছু জনপ্রিয় প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট হল:
- ইভাস্ট্যাট (Evastat)
- অ্যাভোস্ট্যাট (Avostat)
- উইনোভেট (Winovate)
- লেভোনোর্জেস্টেরেল (Levonorgestrel)
- মিফেপ্রিস্টোন (Mifepristone)
প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম:
প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট সাধারণত মাসিকের প্রথম দিন থেকে শুরু করে সেবন করা
হয়। ট্যাবলেটগুলি প্রতিদিন একই সময়ে খাওয়া উচিত। ট্যাবলেটগুলি খাবার বা খাবারের সাথে খাওয়া যেতে পারে।ট্যাবলেটগুলি কখনই চিবিয়ে খাওয়া উচিত নয়। প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
- মাথাব্যথা
- বমি বমি ভাব
- বমি
- পেটে ব্যথা
- ক্লান্তি
- স্তন কোমলতা
প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট খাওয়ার আগে সতর্কতা:
যদি আপনার কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা
হৃদরোগ, তাহলে প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা
বলুন। যদি আপনি গর্ভবতী হওয়ার চেষ্টা করছেন, তাহলে প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট
খাওয়া উচিত নয়।
যদি আপনি কোনও ওষুধ খাচ্ছেন, তাহলে প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট খাওয়ার আগে আপনার
ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট খাওয়ার সময় আপনার ডাক্তারের নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
যদি আপনার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা
বলুন।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক আজ অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা করলাম।
আগামীতে অন্য কোনো ভালো টপিক নিয়ে হাজির হবো। আশা করছি উপরের অবিবাহিত মেয়েদের
মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ আলোচনা আপনার ভালো লেগেছে। যদি কোন প্রশ্ন থাকে
তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান আর আপনার ফ্রেন্ড সার্কেলে এই কনটেন্টটি শেয়ার
করতে ভুলবেন না। আমাদের ফলো করে সাথেই থাকুন।
জমজম আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url